Life Science
নিষেক কাকে বলে – কত প্রকার? ২০২২ ও ২০২৩ – classroomlive
প্রিয় পাঠক আজকে আমরা আলোচনা করতে যাচ্ছি, নিষেক কি / নিষেক কাকে বলে? নিষেক কত প্রকার? ইত্যাদি বিষয়ে। তাহলে চলুন নিষেক সর্ম্পকে বিস্তারিত ভাবে জেনে নেওয়া যাক। নিষেক কাকে বলে – কত প্রকার? ২০২২ ও ২০২৩ – classroomlive
আজকের এই আর্টিকেলে আমরা যা যা জানতে পারবো! তা নিচে উল্লেখ করা হলো:-
- নিষেক কি?
- নিষেক কাকে বলে?
- নিষেকের উল্লেখযোগ্য ঘটনা সমূহ।
- নিষেক কয় প্রকার?
- মানুষের নিষেক প্রক্রিয়া।
- নিষেক কোথায় ঘটে?
- নিষেক কীভাবে হয়?
- নিষেকের সুবিধা ও অসুবিধা!
- নিষেক এর প্রয়োজন হয় কেন?
নিষেক কাকে বলে? নিষেক কত প্রকার ও কি কি? – ClassRoomLive
নিষেক কাকে বলে?
সাধারণত যৌন প্রজননে ডিম্বাণু ও শুক্রাণুর মিলনকে নিষেক বলে । নিষেককে ইংরেজিতে Fertilization বলে। অর্থাৎ যে পদ্ধতিতে শুক্রাণু ও ডিম্বানু মিলিত হয় এবং তাদের সাইটোপ্লাজম ও নিউক্লোসের মিলনের ফলে যে জাইগোট উৎপন্ন হয় সেই পদ্ধতিকে নিষেধ বলে। শুক্রানু ও ডিম্বানুর পরিপূর্ণভাবে মিলিত হওয়াকে নিষিক্তকরণ বলে। নিষেক নিষিক্তকরণের বিকল্প শব্দ বলা হয়। নিষেক কাকে বলে
নিষেক নির্দিষ্ট প্রক্রিয়ার মাধ্যমেই হয়ে থাকে। একই প্রজাতির শুক্রাণু ও ডিম্বানুর মধ্যে সংঘটিত হয় এবং ডিম্বাণু ও শুক্রাণু পরিণত অবস্থায় থাকা লাগে। একবার নিষিক্ত হলে উক্ত ডিম্বানুকে পুনরায় নিষিক্ত করা যায় না। নিষেকের ফলে ডিম্বানুতে ভ্রূণ সৃষ্টি হয়। ফলে গর্ভাশয় ফল এবং ডিম্বক বীজে পরিণত হয়। নিষেক কাকে বলে
গুরুত্বপূর্ণ পোস্ট পড়ুন
👉 ডিজিটাল মার্কেটিং শেখার উপায়
নিষেকের উল্লেখযোগ্য ঘটনা সমূহ:-
নিষেক পদ্ধতিতে দুটি উল্লেখযোগ্য ঘটনা ঘটে থাকে। যথা:-
(১) মিলনের ফলে ডিম্বাণু সক্রিয় হয় এবং ভ্রূণ সৃ্ষ্টিতে উদ্বুদ্ধ হয়।
(২) নিউক্লিয়াসের মিলনের ফলে মাতাপিতার জিনগুলি, যেগুলি বংশগতির বৈশিষ্ট্য, সেগুলি ভ্রূণের প্রতিটি কোষে সঞ্চারিত হয়।
এই কার্যক্রমকে অ্যাম্ফিমিক্সি (Amphimixis) বলা হয়।
নিষেক কয় প্রকার?
নিষেক দুই প্রকার। যথাঃ-
- বহিঃনিষেক (External Fertilization)
- অন্তঃনিষেক (Internal Fertilization)
- বহিঃনিষেক : যে নিষেক প্রক্রিয়া প্রাণিদেহের বাইরে সংঘটিত হয় তাকে বহিঃনিষেক বলে। এ ধরনের নিষেক সাধারণত পানিতে বাস করে এমন সব প্রাণীর মধ্যেই সীমাবদ্ধ। যেমন: বিভিন্ন ধরনের মাছ বা ব্যাঙ। (নিষেক কাকে বলে )
- অন্তঃনিষেক : যে নিষেক প্রক্রিয়া স্ত্রী দেহের জননাঙ্গে সংঘটিত হয় তাকে অন্তঃনিষেক বলে। সাধারণত সঙ্গমের মাধ্যমে পুরুষ প্রাণী তার শুক্রাণু স্ত্রী জননাঙ্গে প্রবেশ করিয়ে এ ধরনের নিষেক ঘটায়। অন্তঃনিষেক ডাঙ্গায় বসবাসকারী অধিকাংশ প্রাণীর অন্যতম বৈশিষ্ট্য। উদাহরণস্বরপ: মানুষ। (নিষেক কাকে বলে )
নিষেক প্রাণীর প্রজাতির উপর নির্ভর করে স্ত্রী-প্রজাতির দেহের ভিতরে অন্তঃনিষেক প্রকিয়ায় বা দেহের বাইরে বহিঃনিষেক প্রক্রিয়ায় সংঘটিত হয়ে থাকে।
গুরুত্বপূর্ণ পোস্ট পড়ুন
👉 শিলা কাকে বলে | বিভিন্ন শিলার বৈশিষ্ট্য
মানুষের নিষেক প্রক্রিয়া
উদহরণ স্বরপ মানুষের নিষেক প্রক্রিয়া সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে। মানব প্রজনন হল যৌন প্রজননের একটি রূপ যাতে কোন পুরুষের সঙ্গে কোন নারীর যৌনসঙ্গমের ফলে মানব ভ্রুনের নিষেক ঘটে। যৌনমিলনের সময় যোনিপথে সারভিক্স হয়ে আসার সময় শুক্রাণু, ডিম্বাণুর সাথে মিলিত হয় এবং ডিম্বাণুকে নিষিক্ত করে। উপরে আলোচনা করা হয়েছে নিষেক কাকে বলে?
এগুলো হল গ্যামেট নামক বিশেষ প্রজনন কোষ, যেগুলো মিয়োসিস নামক প্রক্রিয়ায় সৃষ্টি হয়। যেখানে সাধারণ কোষে ২৩ জোড়া অর্থাৎ ৪৬টি ক্রোমোজোম থাকে, সেখানে গ্যামেট কোষে শুধুমাত্র ২৩টি ক্রোমোজোম থাকে, এবং যখন দুটি গ্যামেট একত্রিত হয়ে জাইগোট বা ভ্রূণ গঠন করে তখন দুটি গ্যামেটের জেনেটিক বৈশিষ্ট্যের মিশ্রণ ঘটে যাকে জেনেটিক রিকম্বিনেশন বলে।
এবং নতুন ভ্রূণে মাতা পিতা উভয়ের কাছ থেকে আসা ২৩টি ক্রোমোজোম একত্রিত হয়ে ২৩ জোড়া ক্রোমোজোম গঠন করে। একটি নির্দিষ্টকালীন গর্ভধারণ পর্যায়ের পর (সাধারণত নয় মাস), প্রসবের মাধ্যমে সন্তানের জন্ম হয়। বিভিন্ন কৃত্রিম শুক্রাণুপ্রদান প্রক্রিয়াতেও ডিম্বাণু নিষিক্ত করা যায়, যেখানে যৌনসঙ্গমের কোন প্রয়োজন পড়ে না। (নিষেক কাকে বলে )
নিষেক কোথায় ঘটে?
ফ্যালোপিয়ান হলো স্ত্রী দেহের এমন একটি অঙ্গ, যেখানে ডিম্বাণুর নিষেক ঘটে। এটি সেতু হিসাবে কাজ করে যার মধ্য দিয়ে পুরুষ শুক্রাণুগুলি অতিক্রম করে। ফ্যালোপিয়ান নালিতে নিষেক ঘটে। এটি শুক্রাণু দ্বারা ডিম্বাণুর মিলনের প্রক্রিয়া। এর পরে, জাইগোট কোষ নামে পরিচিত একটি কোষ গঠিত হয় যা একটি নিষিক্ত ডিম্বাণু। (নিষেক কাকে বলে )
নিষেক কিভাবে হয়?
যৌনমিলনের সময় যোনিপথে সারভিক্স হয়ে আসার সময় শুক্রাণু, ডিম্বাণুর সাথে মিলিত হয় এবং ডিম্বাণুকে নিষিক্ত করে। এই নিষেক প্রক্রিয়া সচরাচর ওভিডাক্টে ঘটে, কিন্তু এটি জরায়ুতেও ঘটতে পারে। এরপর জাইগোট জরায়ুর দেয়ালে অবস্থান নেয় এবং এরপরপরই এমব্রায়োজেনেসিস ও মরফোজেনেসিসের প্রক্রিয়া শুরু হয়। (নিষেক কাকে বলে )
নিষেকের সুবিধা ও অসুবিধা:-
সুবিধা:-
- শুক্রাণু ও ডিম্বাণু গঠনের সময় মায়ােসিস প্রক্রিয়ায় কোষ বিভাজিত হয়।
- এইরূপ বিভাজনে ক্রশিংওভারের সময় ক্রোমােটিড খণ্ডের আদানপ্রদানের ফলে শুক্রাণু ও ডিম্বাণুর ক্লোমােজমের চরিত্রগত গুণের পুনর্বিন্যাস ঘটে।
- ভিন্ন ভিন্ন বংশগত গুণসম্পন্ন শুক্রাণু ও ডিম্বাণুর মিলন ঘটে । এর ফলে অপত্য জীবে উন্নতমানের চরিত্রগত লক্ষণ সৃষ্টি হবার সম্ভাবনা থাকে এবং জীবে বৈচিত্র্য দেখা যায় ।
- জীবের অভিযােজন ক্ষমতা বাড়ে ও অবিলুপ্তির হাত থেকে লক্ষা পায়।
অসুবিধা:-
- দুটি বিপরীত লিঙ্গযুক্ত উদ্ভিদ পাওয়া সবসময় সম্ভব হয় না।
- স্ত্রী ও পুংগ্যামেটের মিলনে অনেক সময় বাধার সৃষ্টি হয় ,যার ফলে মিলনের অভাবে অনেক অসুবিধা দেখা যায়।
নিষেক এর প্রয়োজন হয় কেন?
- নিষেক হলো একটি গুরুত্বপূর্ণ জৈবিক প্রক্রিয়া। নিষেক ডিম্বাণুকে বিভাজিত হতে উদ্দীপ্ত করে। এছাড়াও ডিম্বাণুকে এটি সুনির্দিষ্ট মেরুর মধ্যে স্থির রাখে।
- নিষেক জীবের ডিপ্লয়েড সংখ্যাকে পুনঃপ্রতিষ্ঠিত করে। ডিপ্লয়েড চরিত্র ফিরিয়ে প্রোটিন সংশ্লেষণ করতে ও বিপাকীয় হার বৃদ্ধি করতে নিষেক সাহায্য করে।
- জাইগোটের মধ্যে নতুন জিন সৃষ্টি করতে সাহায্য করে থাকে।
- নিষেক প্রক্রিয়ার ফলে নতুন প্রজন্মের সৃষ্টি হয়।
- নিষেক জীবের বংশ রক্ষার ধারাবাহিকতা নিশ্চিত করে।
- নিষেকের মাধ্যমে ভ্রুণের লিঙ্গ নির্ধারিত হয়।
- নিষেক না ঘটলে নতুন প্রজন্ম সৃষ্টি হবে না। এর ফলে প্রকৃতি থেকে জীবকূল এক সময় ধ্বংস হয়ে যাবে। তাই জীবের বংশধর টিকে রাখার জন্য নিষেকের প্রয়োজন হয়।
শেষ কথা:- আপনি যদি ব্যক্তিগতভাবে এই পোস্টটি পছন্দ করেন, তবে অনুগ্রহ করে পোস্টের নীচে মন্তব্য বক্সে আপনার মতামত জানাবেন।
প্রিয় পাঠক” আজকের এই আর্টিকেলে আমরা নিষেক কাকে বলে? নিষেক কত প্রকার ও কি কি? ইত্যাদি প্রায় সব বিষয় নিয়ে বিস্তারিত ভাবে আলোচনা করার চেষ্টা করেছি।
আশা করছি, এই আর্টিকেল এর মাধ্যমে আপনাদের মনের সকল প্রশ্নের জবাব পেয়েছেন। আমাদের ওয়েবসাইট এর সাথে থাকুন এবং আপনার মনের সকল প্রশ্নের সঠিক ও সহজ ভাষার উত্তর গুলো জেনে নিন, ধন্যবাদ। (নিষেক কাকে বলে)
গুরুত্বপূর্ণ পোস্ট পড়ুন