Life Science

নবম শ্রেণীর জীবন বিজ্ঞান প্রথম অধ্যায় প্রশ্ন উত্তর – জীবন ও তার বৈচিত্র্য

নবম শ্রেণীর জীবন বিজ্ঞান প্রথম অধ্যায় প্রশ্ন উত্তর - জীবন ও তার বৈচিত্র্য

নবম শ্রেণীর জীবন বিজ্ঞান প্রথম অধ্যায় প্রশ্ন উত্তর – জীবন ও তার বৈচিত্র্য | জীব বিদ্যা হল জীবনের রিতি ও প্রক্রিয়া এবং তার বৈচিত্রের অধ্যায়ন |

১. জীববিদ্যার জনক কাকে ও কেন বলা হয়? জীববিদ্যা’ শব্দটি কে প্রথম ব্যবহার করেন? 

উত্তরঃ- জীববিদ্যার জনক (Father of Biology) বলা হয় গ্রিক দার্শনিক ও বিজ্ঞানী অ্যারিস্টলকে (Aristotle, 384-322 BC)।

অ্যারিস্টটলকে ‘জীববিদ্যার জনক’ বলার কারণ হল তিনিই প্রথম জীববিজ্ঞানী যিনি সমস্ত জীবকে প্রকৃতি ও গঠন অনুযায়ী শ্রেণিবিন্যস্ত (hierarchy) করেছিলেন এবং সরল জীবদের স্থান দিয়েছিলেন হায়ারার্কির নীচে এবং জটিল জীবদের স্থাপন করেছিলেন হায়ারার্কির ওপরে। তিনিই প্রথম বলেছিলেন, পৃথিবীতে সরল জীব থেকে জটিল জীবের সৃষ্টি হয়। এই ধারণাকে ‘স্ক্যালা ন্যাচুরি’ (Scala Naturae) বা সৃষ্টির মহান শৃঙ্খল’ রূপে অভিহিত করা হয়।

‘জীববিদ্যা’ বা ‘Biology’ শব্দটি প্রথম ব্যবহার করেন ও ট্রাভিরেনাস (Lamarck and Traviranus, 1801)। ; ল্যাটিন উৎস : Bios = life, logos = discourse)



২.  আধুনিক চিকিৎসাশাস্ত্রে জীববিদ্যার প্রয়ােগ সম্পর্কে সংক্ষিপ্ত ধারণা দাও। 

 উত্তরঃ-  চিকিৎসাশাস্ত্রে জীববিদ্যা রােগ নির্ণয়ে, রােগ নিরাময়ে ও রােগ প্রতিরােধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।  

রােগ নির্ণয়ে ভূমিকা :- রােগীর রক্ত, কফ, মলমূত্র প্রভৃতি চিহ্নিত করা যায়। এ ছাড়া জ্বরের পরিমাণ নির্ণয়ে থার্মোমিটার; অণুবীক্ষণ যন্ত্রের সাহায্যে পরীক্ষা করে রােগের জন্য দায়ী জীবাণুকে। রক্তের চাপ নির্ণয়ে স্ফিগমােম্যানােমিটার; হৃৎপিণ্ডের অবস্থা নির্ণয়ে। ইলেকট্রোকার্ডিওগ্রাফ; মস্তিষ্ক, সুষুম্নাকাণ্ড, অস্থিসন্ধি প্রভৃতি অঙ্গের। গঠনগত ত্রুটি ও রােগ নির্ণয়ে— MRI প্রভৃতি ব্যবহৃত হয়।

রােগ নিরাময়ে ভূমিকা : – আধুনিক জীববিদ্যার সাহায্যে রােগ নিরাময় খুবই সহজসাধ্য হয়ে উঠেছে। ম্যালেরিয়া, উচ্চরক্তচাপ, নিউমােনিয়া প্রভৃতি রােগের চিকিৎসার জন্য বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতেতৈরি অ্যান্টিবায়ােটিকভ্যাকসিন প্রভৃতি প্রয়োগ করা হচ্ছে। এ ছাড়া ক্যানসার রােগ নিরাময়ে রেডিয়াম থেরাপি, কেমােথেরাপি, লেজার। থেরাপি; দেহের বিভিন্ন অঙ্গ প্রতিস্থাপন প্রভৃতিও সহজেই করা সম্ভব হয়েছে।


রােগ প্রতিকারে জীববিদ্যার প্রয়ােগঃ-  ড. জেনারের আবিষ্কৃত বসন্ত রােগের টিকা, লুই পাস্তুর আবিষ্কৃত জলাতঙ্কের টিকা বহু মানুষকে মারণরােগের হাত থেকে রক্ষা করেছে। বর্তমানে পৃথিবী থেকে পােলিয়াে নির্মূলকরণে পালস পােলিয়াে টিকাকরণ প্রভূত সাফল্য পেয়েছে।



৩. শিল্পক্ষেত্রে জীববিদ্যার ভূমিকা সংক্ষেপে আলােচনা করাে।

উত্তরঃ-  জীববিদ্যা আধুনিক শিল্পকে বিভিন্নভাবে বিভিন্ন দিক থেকে সাহায্য করছে। যেমন—

কাঠশিল্পঃ- শাল, বাদাম, জারুল, গামার, হলক, সেগুন, পাইন প্রভৃতি গাছ থেকে স্লিপার, দরজা, জানালা, প্লাইউড প্রভৃতি তৈরির কাঠ পাওয়া যায়। বর্তমানে অণুবিস্তার পদ্ধতিতে এই সমস্ত উদ্ভিদের সংখ্যা অনেকাংশে বাড়ানাে সম্ভব হয়েছে।

চা-শিল্পঃ- চা শিল্পে ব্যাসিলাস মেগাথেরিয়াম (Bacillus megatherium) নামক ব্যাকটেরিয়া প্রয়ােগ করে স্বাদ ও গন্ধের উৎকর্ষতা বৃদ্ধি করা হয়েছে।

চর্মশিল্পঃ- বিভিন্ন জীবাণু ও ছত্রাক ব্যবহার করে চমশিল্পের প্রভূত উন্নতি ঘটানাে হয়েছে। এক্ষেত্রে জীবাণু নিঃসৃত প্রােটিয়েজ উৎসেচক চামড়াকে ট্যান করতে সাহায্য করে।

৪.পরিবেশদূষণ নিয়ন্ত্রণে জীববিদ্যার ভূমিকা আলােচনা করে। 

উত্তরঃ- বর্তমানে পরিবেশদূষণ হল মানুষের কাছে সবচেয়ে বড়াে সংকট। এই পরিবেশদূষণ নিয়ন্ত্রণে জীববিদ্যার ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

 বায়ুদূষণ রােধেঃ-প্রচুর গাছপালা লাগানো, বনমহােৎসব, অরণ্য সপ্তাহ প্রভৃতি কর্মসূচি পালন করা হয়। গাছ দূষিত কার্বন ডাইঅক্সাইডকে বাতাস থেকে টেনে নিয়ে এবং বিশুদ্ধ অক্সিজেন বাতাসে ত্যাগ করে বায়ুকে অনেকাংশে দূষণমুক্ত রাখে।

জলদূষণ রােধেঃ- বিভিন্ন প্রকার শৈবাল মুখ্য ভূমিকা পালন করে। যেমন- (i) শৈবাল খর জল থেকে কার্বনেট, বাইকার্বনেট শােষণ করে তা ব্যবহারের উপযুক্ত করে তােলে। (i) কচুরিপানা নােংরা দূষিত জল থেকে ক্যাডমিয়াম, ক্রোমিয়াম, সালফেট, কোবাল্ট, নিকেল, লেড ও মার্কারির মতাে ভারী ধাতু শােষণ করে জলকে ব্যবহারযােগ্য করে তােলে। (ii) কিছু কিছু ছত্রাকের (যেমন—পেনিসিলিয়াম) দেহনিঃসৃত অ্যান্টিবায়ােটিকের উপস্থিতিতে জলাধারের চারপাশে ক্ষতিকা।



৫. জিন প্রযুক্তিতে আধুনিক জীববিদ্যার প্রয়ােগ সম্পর্কে আলােচনা করাে।
উত্তরঃ-  কোনাে সজীব কোশের কোনাে ত্রুটিপূর্ণ জিনকে অন্য কোনাে সমজাতীয় জীবের DNA থেকে নেওয়া সুস্থ ও স্বাভাবিক জিন দ্বারা প্রতিস্থাপিত করে ত্রুটিপূর্ণ জিনকে ত্রুটিমুক্ত করা অথবা কোনাে সজীব কোশের কোনাে জিনে অপর কোনাে কোশের DNA স্থিত কোনাে জিন কৃত্রিম উপায়ে প্রবেশ করিয়ে সেই জীবের জিনবিন্যাসের পরিবর্তন করাকে জিন প্রযুক্তি (Genetic engineering) বলে।

জীববিদ্যার এই আধুনিক শাখাটির সাহায্যে বর্তমানে চিকিৎসাক্ষেত্রে, কৃষিক্ষেত্রে, খাদ্য ও পানীয় প্রস্তুতিতে ব্যাপক উপকার পাওয়া যাচ্ছে।




৬. ট্রান্সজেনেসিস ও ট্রান্সজেনিক জীব কাকে ? উদাহরণ দাও।
উত্তরঃ- জৈবপ্রযুক্তিবিদ্যা বা বায়ােটেকনােলজির দ্বারা একটি নির্দিষ্ট জীবের জিন অন্য কোনাে জীবের মধ্যে প্রবেশ করিয়ে নতুন জিনােটাইপসম্পন্ন ও আরও উন্নতপ্রকার জীব সৃষ্টির পদ্ধতিকে ট্রান্সজেনেসিস বলে। ট্রান্সজেনেসিস পদ্ধতিতে সৃষ্টি করা জীবেদের বলা হয় ট্রান্সজেনিক জীব।

উদাহরণঃ- বিটি কটন, গােল্ডেন রাইস, রােসি (ট্রান্সজেনিক গােরু) ইত্যাদি।




৭. ট্রান্সজেনেসিস পদ্ধতির গুরুত্বগুলি কী কী ?

উত্তরঃ-  ট্রান্সজোলসিস পদ্ধতির গুরুত্বগুলি হল শস্য উৎপাদনকারী উদ্ভিদে এবং মাছের দেহে মানুষের বৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণকারী হরমােনের প্রবেশের মাধ্যমে ট্রান্সজেনেসিস ঘটিয়ে শস্য এবং মাছেদের উৎপাদন প্রচুর বাড়ানাে হচ্ছে। বর্তমানে Bt জিন প্রবেশ করিয়ে পতঙ্গ প্রতিরােধী ও রােগ প্রতিরােধে সক্ষম বেগুন, টম্যাটো এবং bxn জিনযুক্ত আলু ফলান।




৮.  মাইক্রোবায়ােলজি ও প্যারাসাইটোলজি কাকে বলে ? 

উত্তরঃ- মাইক্রোবায়ালজি জীববিদ্যার যে শাখায় আণুবীক্ষণিক জীব   (যেমন- ছত্রাকব্যাকটেরিয়া, ভাইরাস প্রভৃতি) এর বাসস্থান, প্রকৃতি, গঠন, বংশবিস্তার, গুরুত্ব ও অপকারিতা সম্পর্কে আলােচনা। করা হয়, তাকে মাইক্রোবায়ােলজি বলে।

প্যারাসাইটোলজিঃ-  জীববিদ্যার যে শাখায় উদ্ভিদ ও প্রাণীদেহের অন্তঃ ও বহিঃপরজীবী জীবের জীবনচক্র, সংক্রমণ পদ্ধতি এবং রােগ সৃষ্টির প্রকৃতি সম্পর্কে আলােচনা তাকে প্যারাসাইটোলজি  (Parasitology) বলা হয়।




 ৯. ভূগোেল এবং জীববিদ্যার সমন্বয়ে গঠিত বিজ্ঞান শাখার নাম লেখাে। জীববিদ্যায় এই শাখার গুরুত্ব কী ?

 উত্তরঃ-  ভূগােল এবং জীববিদ্যার সমন্বয়ে গঠিত বিজ্ঞান শাখাকে বলা হয় বায়ােজিওগ্রাফি (Biogeography)।

গুরুত্বঃ- জীবজগতে বিভিন্ন জীব বিভিন্ন ভৌগােলিক পরিবেশে বাস করে। ভৌগােলিক জীববিদ্যা বা বায়ােজিওগ্রাফির সাহায্যে আমরা বিভিন্ন জীবের ভৌগােলিক অবস্থান ও সেই পরিবেশের সঙ্গে জীবের আন্তঃসম্পর্ক সম্বন্ধে ধারণা লাভ করতে পারি।



 ১০. জুলজি (Zoology) ও বটানি (Botany)   কাকে বলে ?

উত্তরঃ-  (i) জুলজি (Zoology) :- জীববিজ্ঞানের যে শাখায় প্রাণী সম্পর্কিত বিষয়ে আলােচনা করা হয়, তাকে জুলজি (Zoology) বলা হয়। ‘Zoology’ শব্দটি গ্রিক শব্দ ‘Zoon’ (প্রাণী/animal) এবং ‘logos’ (জ্ঞান/Knowledge)-র সমন্বয়ে গঠিত।

(i) বটানি (Botany) :- জীববিজ্ঞানের যে শাখায় উদ্ভিদ সম্পর্কে আলােচনা করা হয়, তাকে বটানি (Botany) বলা হয়। | Botany’ শব্দটি গ্রিক শব্দ ‘Botane’ (Plant) থেকে উদ্ভব হয়েছে, যার অর্থ গাছপালা বা উদ্ভিদ।



১১. ওষুধ তৈরিতে জীববিদ্যার গুরুত্ব উল্লেখ করাে। 

উত্তরঃ- ওষুধ তৈরিতে জীববিদ্যার গুরুত্ব / ভূমিকা : ।জীববিদ্যার এবং প্রযুক্তিবিদ্যার সাহায্যে বিভিন্ন অণুজীব থেকে বিভিন্ন অ্যান্টিবায়ােটিক (যেমন- পেনিসিলিন, স্ট্রেপটোমাইসিন, অ্যাম্পিসিলিন, এরিথ্রোমাইসিন প্রভৃতি) আবিষ্কার করা সম্ভব হয়েছে।  বিভিন্ন প্রাণীজাত পদার্থ থেকে বর্তমানে বহু গুরুত্বপূর্ণ ওষুধ

 যেমন- (i) সাপের বিষ থেকে ল্যাকোসিস, (ii) মৌমাছির বিষ থেকে এপিস, (ii) রােগাক্রান্ত কুকুরের লালারস থেকে জলাতঙ্ক রােগের ভ্যাকসিন হাইড্রোফোবিনাম প্রভৃতি।


বিভিন্ন ভেষজ উদ্ভিদের নির্যাস থেকে গুরুত্বপূর্ণ ওষুধ তৈরি হয়। যেমন- সর্পগন্ধা থেকে প্রাপ্ত রেসারপিন উচ্চরক্তচাপ প্রশমনকারী ওষুধ তৈরিতে, সঙ্কোনা গাছ থেকে প্রাপ্ত কুইনাইন ম্যালেরিয়া রােগের ওষুধ তৈরিতে ব্যবহৃত হয়।




১২. জীববিদ্যার (Biology) সংজ্ঞা দাও।

উত্তরঃ-  বিজ্ঞানের যে শাখায় জীবজগতের অন্তর্গত অণুজীব থেকে শুরু করে সমস্ত উন্নত উদ্ভিদ ও প্রাণীর আকৃতি, প্রকৃতি, শারীরবৃত্তীয় কার্যাবলি, জীবনপ্রক্রিয়া, পরিবেশের সঙ্গে মিথেস্ক্রিয়া, স্থায়িত্ব, অভিযােজন, বংশগতি, অভিব্যক্তি অর্থাৎ জীবন সংক্রান্ত যাবতীয় তথ্য আলােচিত হয়, তাকে জীববিদ্যা বা বায়ােলজি বলে।




১৩. জীববিদ্যা পাঠের প্রধান দুটি উদ্দেশ্য লেখাে। 

উত্তরঃ-   পরিবেশের বিভিন্ন জীব সম্পর্কে শিক্ষার্থীদের মধ্যে আগ্রহ ও কৌতূহল সৃষ্টি করা। 
পরিবেশের মূল উপাদানগুলির সঙ্গে জীবজগতের সম্পর্ক ও পারস্পরিক নির্ভরশীলতা সম্বন্ধে জ্ঞান ও লাভ করা।




১৪. ফলিত জীববিদ্যা (Applied Biology) বলতে কী  বোঝো ?

উত্তরঃ-  জীববিদ্যার যে শাখায় জীব সংক্রান্ত নানা তথ্য ও তত্ত্ব প্রয়ােগ করে মানব কল্যাণমূলক পদ্ধতি সম্পর্কে আলােচনা করা হয় এবং সরাসরি মানুষের উপকারে ব্যবহৃত হয়, তাকে ফলিত জীববিদ্যা বলা হয়।




১৫. শারীরস্থান (Anatomy) বলতে কী বােঝাে?

উত্তরঃ-  জীববিদ্যার যে শাখায় কোনাে জীবদেহের অঙ্গ, বিভিন্ন তত্ত ও তাদের অবস্থানের ব্যাপারে আলােচনা করা হয়, তাকে শারীরস্থান (Anatomy) বলে। 




১৬. অনাক্রম্যবিদ্যা (Immunology) কাকে বলে?

উত্তরঃ- জীববিদ্যার যে শাখায় কোনাে জীবদেহেবিভিন্ন রােগজীবাণুর প্রভাব ও তাদের প্রতিরােধ ব্যবস্থার বিষয়ে আলােচনা করা হয়, তাকে অনাক্রম্যবিদ্যা (Immunology) বলে।




১৭. বাস্তুবিদ্যা বা ইকোলজি (Ecology) কাকে বলে?

উত্তরঃ- জীববিজ্ঞানের যে শাখায় পরিবেশ ও জীবের মধ্যে পারস্পরিক সম্পর্ক এবং জীবসম্প্রদায়ের মধ্যে আন্তঃসম্পর্ক সম্পর্কে আলােচনা করা হয়, তাকে বাস্তুবিদ্যা বা ইকোলজি বলা হয়।




১৮. কোশবিদ্যা (Cytology) কাকে বলে?

উত্তরঃ- জীববিদ্যার যে শাখায় বিভিন্ন প্রকার কোশ, তাদের অঙ্গাণুসমূহ (যেমন— মাইটোকনড্রিয়া, রাইবােজোম, প্লাস্টিড গলগি বস্তু, নিউক্লিয়াস প্রভৃতি), সাইটোপ্লাজম, বিভিন্ন কোশীয় অজীবীয় বস্তু প্রভৃতির গঠন এবং কাজ সম্পর্কে আলােচনা করা হয়, তাকে কোশবিদ্যা (Cytology) বা কোশীয় জীববিদ্যা (Cell Biology) বলা হয়।




১৯. আণবিক জীববিদ্যা (Molecular Biology) কাকে বলে?

উত্তরঃ- আণবিক জীববিদ্যা (Molecular Biology) :জীববিদ্যার যে শাখায় বৃহৎ, জটিল জৈব অণুগুলির (যেমন— প্রােটিন, উৎসেচক, কার্বোহাইড্রেট, লিপিড, নিউক্লিক অ্যাসিড, হরমােন প্রভৃতি) ভৌত ও রাসায়নিক গঠন, সংশ্লেষ পদ্ধতি এবং কাজ সম্পর্কে আলােচনা করা হয়, তাকে আণবিক জীববিদ্যা বলা হয়।


২০. জীবরসায়নবিদ্যা ও আণবিক জীববিদ্যার সাদৃশ্য লেখাে।

উত্তরঃ- (i) উভয় বিজ্ঞান শাখাতেই জৈব অণুর গঠন, সংশ্লেষণ ও কার্যপদ্ধতি সম্পর্কে আলােচনা করা হয় ।
(ii) উভয় বিজ্ঞান শাখার সাহায্যে RNA, প্রােটিন প্রভৃতি জৈব অণুর গঠন সম্পর্কে বিস্তারিত ধারণা লাভ করা সম্ভব হয়।


২২. ফার্মাসি (Pharmacy) কী?

উত্তরঃ- এটি একটি প্রায়ােগিক জীববিদ্যা এর সাহায্যে বিভিন্ন ধরনের ওষুধ তৈরি, চিকিৎসকের নির্দেশ অনুযায়ী ওষুধ প্রদান করা হয়।




২৩. মহাকাশ গবেষণায় জীববিদ্যা কীভাবে ভূমিকা পালন করে?

উত্তরঃ- মহাকাশ গবেষণায় জীববিদ্যা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। ক্লোরেল্লা (Chlorella) নামক এককোশী শৈবালকে মহাকাশযানে ব্যবহার করা হয়। মহাকাশচারীরা এই শৈবালকে খাদ্যরূপে গ্রহণ করে এবং ক্লোরেল্লা মহাকাশচারীর শ্বসনে নির্গত কার্বন ডাইঅক্সাইড শােষণ করে সালােকসংশ্লেষ প্রক্রিয়ায় খাদ্য তৈরি করে ও মহাকাশযানটিকে দূষিত গ্যাস মুক্ত করে। এ ছাড়া ক্লোরেল্লা দ্বারা নির্গত অক্সিজেন মহাকাশচারীর শ্বসনে ব্যবহৃত হয়।




২৪. বনপালনবিদ্যা (Forestry) কাকে বলে?

উত্তরঃ- জীববিদ্যার যে শাখায় বনসংরক্ষণ, বৃক্ষরােপণ, বিজ্ঞানসম্মতভাবে গাছের লালনপালন, রক্ষণাবেক্ষণ করা হয় এবং বনজ সম্পদের উন্নয়ন সম্পর্কে আলােচনা করা হয়, তাকে বনপালনবিদ্যা বা ফরেস্ট্রি বলে।




২৫. এক্সোবায়ােলজি (Exobiology) কী ?

উত্তরঃ- পৃথিবীর বাইরের কোনাে গ্রহ বা উপগ্রহে জীবনের সন্ধান সংক্রান্ত জীববিদ্যাকে এক্সোবায়ােলজি বলে। যেমন—চাঁদে, মঙ্গলগ্রহে জীবনের অনুসন্ধান।





২৬. মহামারি দূরীকরণে জীববিদ্যার ভূমিকা অপরিসীম–কারণসহ ব্যাখ্যা করাে। 

উত্তরঃ- মহামারি যেমন— কলেরা, প্লেগ, ম্যালেরিয়া প্রভৃতি দূরীকরণে জীববিদ্যার ভূমিকা অপরিসীম। জীববিদ্যার রােগবিদ্যা (Pathology) শাখার সাহায্যে মহামারি সৃষ্টিকারী রােগগুলির জন্য দায়ী জীবাণুদের চেনা, তাদের সংক্রমণ পদ্ধতি প্রভৃতি জানা সম্ভব হয়েছে। এই সমস্ত জীবাণুকে ধ্বংস করে, তাদের বাহক প্রাণীর প্রজনন ক্ষেত্র নষ্ট করে এবং ভ্যাকসিন প্রয়ােগ করে মহামারিগুলিকে বর্তমানে পৃথিবী থেকে দূর করা সম্ভব হয়েছে।





২৭. বংশগত রােগ নির্ণয় ও তার প্রতিকারে জীববিদ্যার ভূমিকা লেখাে।

উত্তরঃ- জীববিদ্যা ও জেনেটিক্সের সাহায্যে মানুষ বর্তমানে প্রায় চার হাজারের মতাে বংশগত রােগকে শনাক্ত করতে পেরেছে। যেমনহিমােফিলিয়া, থ্যালাসেমিয়া, কয়েক ধরনের ক্যানসার প্রভৃতি। বর্তমানে জিনথেরাপি, ব্লাড ট্রান্সপ্লান্ট, কেমােথেরাপি প্রভৃতি বিভিন্ন চিকিৎসা পদ্ধতি দ্বারা এই সমস্ত রােগের প্রকোপ অনেকাংশে কমানাে সম্ভব হয়েছে। এ ছাড়া জেনেটিক কাউন্সেলিং-এর মাধ্যমে বর্তমানে বংশগত রােগাক্রান্ত সন্তান উৎপাদনও অনেক কমিয়ে আনা হয়েছে।




২৮. রেণুবিদ্যা কাকে বলে? এর গুরুত্ব কী?

উত্তরঃ- বেণুবিদ্যা (Palynology): উদ্ভিদবিদ্যার যে শাখাতে রেণুর গঠন ও প্রকৃতি সম্বন্ধে আলােচনা করা হয়, তাকে রেণুবিদ্যা বা প্যালিনােলজি বলে।

গুরুত্ব : প্রত্নউদ্ভিদবিদ্যার অন্তর্গত রেণুবিদ্যার সাহায্যে সমুদ্রের বা মাটির নীচে কোন পাথরের স্তরে জীবাশ্ম জ্বালানি আছে তার সন্ধান পাওয়া যায়।




২৯. রেডিয়েশন বায়ােলজি কাকে বলে?

উত্তরঃ- যে জীববিদ্যার শাখায় জীবদেহের ওপর এবং তাদের শারীরবৃত্তীয় কার্যাবলির ওপর বিভিন্ন প্রকার তেজস্ক্রিয় রশ্মির প্রভাব সংক্রান্ত আলােচনা করা হয়, তাকে রেডিয়েশন বায়ােলজি (Radiation Biology) বলে।



Related Articles

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Back to top button